প্লাস্টিকের টুলে একটা ছিদ্র থাকার কারণ।

আমাদের নিত্যকার ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিকের টুল খুবই জনপ্রিয় একটি আসবাব। আমরা সবাই-ই এ টুলের সাথে কম বেশি পরিচিত। প্রায় সবার বাড়িতেই বসার জন্য ছোট বড় প্লাস্টিকের টুল ব্যবহার করা হয়। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে যে টুলগুলোর মাঝ বরাবর একটি গোলাকার ছিদ্র থাকে। মজার ব্যাপার হলো, বেশিরভাগ মানুষই এর পেছনে কারণটা জানেন না।


নিত্যকার ব্যবহারের জন্য প্লাস্টিকের টুল খুবই জনপ্রিয় একটি আসবাব


অনেকে মনে করে থাকেন যে এটা শুধুমাত্র ডিজাইন হিসেবেই করা হয়ে থাকে। তবে আমাদের এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। কোনো পণ্যের আকর্ষনীয় ডিজাইন কেবল সৌন্দর্যের জন্যই করা হয় না, এর পিছনে কোনো না কোনো উদ্দেশ্য থাকেই। ঠিক তেমনি প্লাস্টিকের টুলে ছিদ্র রাখার পেছনেও আছে কিছু উদ্দেশ্য। আরো সঠিক করে বলতে গেলে, এটির পিছনে বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে। আর কারণটা জানলে অবাক হবেন আপনিও।


এ ধরনের টুলগুলোতে ছিদ্র রাখার প্রথম কারণ হলো এটি টুল এর ভেঙে যাওয়াকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আমরা অনেকেই এসব টুলের উপর দাঁড়িয়ে নানান রকম গৃহস্থালি কাজ করে থাকি। এক্ষেত্রে টুলটি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে ছিদ্র থাকলে ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। অনেক সময় দেখা যায়, কোনো ওভার ওয়েট ব্যক্তিও যদি টুলের উপর দাঁড়ান, তখনও সেটি ভেঙ্গে যায় না। এর পেছনেও অবদান রয়েছে ছোট্র এ ছিদ্রটির।


ছিদ্রটি মূলত টুলের বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বলেই এমনটা ঘটে। একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন প্লাস্টিকের টুলের আকৃতি যেমনই হোক না কেন এর মাঝের ছিদ্রটি গোলাকার হয়। আর গোলাকার হওয়ার কারণেই বল বা চাপ চারদিকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পায়৷


ছিদ্রটি মূলত টুলের বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে

এতে করে টুলের কাঠামোগত অখণ্ডতা বজায় থাকে এবং কেউ যখন এর উপর বসে তখন এটি টুলক ভেঙে যাওয়া থেকে রোধ করে। কিন্তু যদি এটি চারকোনা, ত্রিকোনা কিংবা অন্য কোন আকৃতির ছিদ্র হতো তাহলে ভেঙ্গে যেতো। কারণ তখন বল একটি জায়গাতেই পুঞ্জিভূত হয়ে থাকতো। যার ফলে ভেঙ্গে যাবার সম্ভবনা অনেকাংশে বেড়ে যেতো।


আবার টুলকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নিতেও ছিদ্রটি সুবিধা দেয়। এর কারণে প্রয়োজন হলে ছিদ্রের ভিতরে আঙ্গুল দিয়ে তা বহন করা যায়। আর এভাবে বহন করা অনেকটা সহজও বলা যায়।


আরেকটি কারণ হলো এ ধরনের টুল সাধারণত একটির উপর অন্যটি স্তুপ আকারে সাজিয়ে রাখা হয়।  এভাবে রাখলে দুটি টুলের মাঝে ফাকা অংশে বায়ুচাপ সৃষ্টি হয়। তাই এরা একটার অপরটার সাথে আটকে যায় না। তবে যদি কোন ছিদ্র না থাকে তবে টুলগুলি খুব সহজে একটি আরেকটির সাথে আটকে যাবে। এছাড়া টুলের ডিজাইনকে আকর্ষণীয় ও সুন্দর করার জন্যও এমনটা করা হতে পারে। 


টুলে ছিদ্র রাখার আরেকটি উপকারীতা হলো এতে প্লাস্টিক কিছুটা হলেও সাশ্রয়ী হয়। এমনভাবে টেকসই, হালকা এবং স্ট্যাকেবল হিসেবে এর নকশা করা হয় যাতে করে গ্রাহকদের ব্যবহার করতে কোনো অসুবিধা না হয়। এসব টুলে নকশার খুব একটা বৈচিত্র্য না থাকলেও রঙের বাহার আছে বেশ। সবুজ, নীল, কালো, লাল, বেগুনিসহ বাহারি রঙে বাজারে পাওয়া যায় এগুলো।


এমনকি এদের বিভিন্ন নামও আছে। ঘরে জায়গা কম থাকলে প্লাস্টিকের ম্যাজিক টুল বেছে নেন অনেকেই। এতে বসার পরে ভাঁজ করে  এক কোনে সাজিয়ে রাখতে সুবিধা হবে। ছোট্ট ঘরে যেখানে দুটি সোফা বসাতে হিমশিম খেতে হবে, সেখানে টুল ব্যবহার করলে চার-পাঁচজন বসতে পারবে অনায়াসেই। শুধু স্থানসংকুলানের জন্যই টুল উপযোগী তা নয়, ঘর সাজে যে কোন থিমের সঙ্গেও সহজেই মানিয়ে যায় প্লাস্টিকের টুল।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url