বিশ্বের সবচেয়ে সুখী আর নিরাপদ শহর কোপেনহেগেন।

বিশ্বের সবচেয়ে সুখী আর নিরাপদ নগরীগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন। আধুনিক আর আয়েশী জীবনযাপণে একটুও কমতি রাখেনি এই পরিকল্পিত শহর। বিশাল জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও উত্তর ইউরোপের সবচেয়ে ধনী শহরগুলোর কাতারে আছে এটি।

বিশ্বের সবচেয়ে সুখী আর নিরাপদ শহর কোপেনহেগেন।

নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ভয় নেই এখানে। এমনকি গভীর রাতে চলাফেরা করতেও কোন সমস্যা হয় না। রাস্তায় চলাফেরা করার সময় মোবাইল, টাকা পয়সা, ল্যাপটপ কোন কিছুই খোয়া যাওয়ার ভয় নেই। এমনকি তরুণীরাও নিশ্চিন্তে কাজে যেতে পারেন গভীর রাতে।


অবশ্য উন্নত হলেও শহরটির অর্ধেকের চেয়েও বেশি মানুষ সাইকেলে করে অফিসে কিংবা স্কুলে যাতায়াত করে। এমনকি রাজনীতিবিদরা পর্যন্ত কাজে যায় বাইকে করে। পার্লামেন্টের বেশিরভাগ সদস্য প্রতিদিন ব্যবহার করেন সাইকেল।


তবে এমন নয় যে তাদের অন্য কোনো বাহন নেই, বরং শহরটিতে এমন অনেক মানুষও আছেন যাদের দুই তিনটি করে প্রাইভেট কার আছে। কিন্তু তারা নিজেদের ও পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে চান বলেই এ বাহন ব্যবহার করেন। এছাড়া সাইকেল চালাতে বেশ পছন্দও করেন তারা।


বাই সাইকেল চালাতে যারা পছন্দ করেন তাদের কাছে কোপেনহেগেন অত্যন্ত প্রিয় এক শহর। বিশ্বের প্রধান দুই বাইসাইকেল-বান্ধব নগরীর একটিও এটি। এই নগরীতে অন্যান্য গাড়ির চেয়ে সাইকেল আছে পাঁচ গুণ। যার কারণে শহরে নেই কোনো যানবাহনের ধোঁয়া। পরিবেশ দূষণমুক্ত এ সবুজ শহরটি পৃথিবীর অন্য সব দেশের কাছেই আইডলে পরিণতে হয়েছে!


তবে এমনটা কিন্তু এক দিনে হয় নি। বছরের পর বছর ধরে নানা পরিকল্পনা নিতে হয়েছে, অবকাঠামো গড়তে হয়েছে। এখানে ৩৫০ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা আছে বাইসাইকেলের জন্য। এছাড়া সাইক্লিস্টদের জন্য আলাদা ট্রাফিক সিগন্যাল পর্যন্ত আছে। 


শুধু সাইক্লিংয়ের জন্য নয়, জানা যায় পায়ে হাঁটার জন্যও কোপেনহেগেন অন্যতম পরিবেশ বান্ধব শহর। এ শহরের মানুষকে কোনো ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আতঙ্কে থাকতে হয় না, তারা নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে দিনযাপন করেন।


শুধু তাই নয়, সুস্থতার দিক দিয়েও অনান্য শহরের বাসিন্দাদের তুলনায় কোপেনহেগেন বাসীরা এগিয়ে আছেন। তারা সপ্তাহে মাত্র ৩৭ ঘন্টা কাজ করেন। তাছাড়া এর সাথে পর্যাপ্ত অবসর তো আছেই। 


শহরটি ১ বছরের মাতৃত্বকালীণ ছুটি, শ্রমিকদের মূল্যায়ন সহ চমৎকার সব নীতির জন্য সমগ্র বিশ্বের সুনাম কুড়িয়েছে। এছাড়া, এখানকার মানুষেরা যে কাউকে সহজেই আপন করে নিতে পারে।


একুশ শতক থেকেই সভ্যতা আর সাংস্কৃতিক ব্যপ্তি পেয়েছে এই শহর। উইন্ড পাওয়ার, বায়োম্যাস ফুয়েল, বর্জ্য ব্যাবস্থাপণাসহ আরো অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০২৫ সালের মধ্যে কার্বন নিউট্রাল শহর হবার লক্ষ্যে এগোচ্ছে কোপেনহেগেন।


তবে সবদিক থেকে সুনাম অর্জন করলেও শহরটির কিছু খারাপ দিকও রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো সেখানে অবৈধ সম্পর্ক খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়।দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপের বিবাহবহির্ভূত অবৈধ সম্পর্কের রাজধানী হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত ছিল কোপেনহেগেন। 


তবে, সম্প্রতি শহরটি তার অবস্থান থেকে সরে এসেছে। ডেনমার্কের অনলাইন ডেটিংয়ে বিবাহিত নারীদের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে।

Next Post Previous Post
1 Comments
  • অম্রিতা
    অম্রিতা ১২ অক্টোবর, ২০২৪ এ ৭:১১ PM

    💙

Add Comment
comment url