পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম কয়েকটি দেশ।

পৃথিবীতে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে তীব্র শীতের কারণে বেঁচে থাকা মুশকিল হয়ে পড়ে। চলুন জেনে নেই এমনই কিছু দেশের কথা।


Table of content
  • এন্টার্কটিকা
  • রাশিয়া
  • গ্রিনল্যান্ড 
  • আমেরিকা
  • ফিনল্যান্ড 
  • মঙ্গোলিয়া


পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল স্থান এন্টার্কটিকা

এন্টার্কটিকা

পৃথিবীর সব থেকে ঠান্ডা অঞ্চল হল এন্টার্কটিকা। শীতল ও শুষ্কতম দুর্গম এ মহাদেশটি সবসময় বরফে ঢাকা থাকে। পৃথিবীর মানচিত্রে তাই একে সাদা রং দিয়ে দেখানো হয় । সারা বছর কনকনে ঠাণ্ডা ও তুষার ঝড় দেখা যায়। শীতকালে তাপমাত্রা -৪০ ডিগ্রি থেকে -৭৫ ডিগ্রি পর্যন্ত হয়ে যায়। এর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হল -৮৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বলা হয়, আন্টার্টিকা ফ্রিজ হিসেবে কাজ করে পৃথিবীর চমৎকার সেবা করেছে।

সারা বছর সাদা বরফের চাদরে ঢাকা থাকায় আন্টার্টিকা মহাদেশের আরেক নাম সাদা মহাদেশ।মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত এখানে ২৪ ঘণ্টা অন্ধকার থাকে । আকাশে ২৪ ঘণ্টা সূর্য দেখা যায় না। 


বছরে  মাত্র  দুই মাসের জন্য সূর্যের মুখ দেখতে পাওয়া যায় রাশিয়াতে

রাশিয়া

রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম শীতল দেশ। অ্যান্টার্কটিকার পর বিশ্বের সবচেয়ে শীতলতম দেশ বলা হয় এখানকার সাইবেরিয়াকে। গরমকালেও তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শীতকালে -১০ ডিগ্রিতে ওঠানামা করে।

এখানে বছরে  মাত্র  দুই মাসের জন্য সূর্যের মুখ দেখতে পাওয়া যায়। আর প্রায় সারাবছরই হিম শীতল ও বরফাচ্ছন্ন থাকে। যার কারণে এখানে জীবনযাপন বেশ কষ্টকর। 

বরফ ঢাকা রাশিয়ায় ঠান্ডার পরিমাণ এতোই বেশি যে, সেখানকার বাসিন্দারা গা গরম করতে গরম পোশাক পরার পাশাপাশি এলকোহল জাতীয় দ্রব্যও পান করে থাকেন।


গ্রিনল্যান্ডের প্রায় ৮০ ভাগেরও বেশি জায়গা পুরো বরফে ঢাকা

গ্রিনল্যান্ড 

নীল জলরাশির মাঝে বিশাল দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের প্রায় ৮০ ভাগেরও বেশি জায়গা পুরো বরফে ঢাকা। অবশ্য কিছু কিছু জায়গায় সবুজের চিহ্নও দেখা যায়। তবে তা খুবই সামান্য।

সূর্যের আলো এই দ্বীপে প্রায় আসে না বললেই চলে। যার কারণে বছরের বেশিরভাগই প্রচন্ড শীতে কাবু হয়ে থাকতে হয় গ্রীনল্যান্ডবাসীদের। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে এদেশের মানুষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যায় না। গরমকালের সব থেকে উষ্ণতম তাপমাত্রা হল -৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

 

বরফ পড়ার কারণে অনেক সময় রাস্তা-ঘাটে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়

আমেরিকা

শীতপ্রধান অন্যান্য দেশগুলোর মতো আমেরিকাও বছরের বেশিরভাগ সময় বরফে আচ্ছাদিত থাকে। এখানে প্রায় বরফঝড় বা তুষারপাতের দেখা পাওয়া যায়।

বরফ পড়ার কারণে অনেক সময় রাস্তা-ঘাটে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। স্থবির হয়ে পড়ে জীবন। এই দেশের সব থেকে শীতলতম স্থান হল আলাস্কা। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো গরম কালেও এখানকার মানুষজনকে বরফের সঙ্গেই বসবাস করতে হয়। 


শীতপ্রধান দেশ হিসেবে ফিনল্যান্ডের পরিচিতি পৃথিবীব্যাপী।

ফিনল্যান্ড 

শীতপ্রধান দেশ হিসেবে ফিনল্যান্ডের পরিচিতি পৃথিবীব্যাপী। কয়েক হাজার বছর আগেও দেশটি বরফে ঢাকা ছিল বলে ধারণা করা হয়।

অনেকের ধারনা দেশটির হাজার হাজার হ্রদও নাকি সৃষ্টি হয়েছে বরফের চাপে মাটি দেবে যাওয়ার কারণে। শীতকালে বরফে ঢেকে যায় সেখানকার প্রকৃতি। শীতের কারনে নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের কাজ পর্যন্ত করতে পারেন না বাসিন্দারা।

তবু এদেশের মানুষ শীতকে উপভোগ করে। শীতকালে এই দেশের তাপমাত্রা থাকে ০ ডিগ্রি থেকে -৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গরমকালে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬.৫ দিগ্রি সেলসিয়াসে। 


গরমকালেই তাপমাত্রা থাকে ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মঙ্গোলিয়া 

পৃথিবীর শীতলতম দেশের মধ্যে অন্যতম একটি হলো মধ্য এশিয়ার দেশ মঙ্গোলিয়া। এটি এমন এক দেশ, যেখানে গরমকালেই তাপমাত্রা থাকে ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তবে শীতকালে কখনও তাপমাত্রা নেমে -২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও চলে যায়। এখানে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে বরফ জমা হয়। ভবনের ছাদে কিংবা চূড়ায়ও জমা হয় বরফ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url